লামা প্রতিনিধি :: প্রশাসনের অভিযানের পরেও লামায় থামছে না পাহাড় কাটার মহোৎসব। পাহাড় কেটে ঝিরি ও ফসলি জমি ভরাট করে চলেছে একটি চক্র।
এতে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তারা জানান, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন না মেনে লামা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় অব্যাহত রয়েছে পাহাড় কাটা। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, সম্প্রতি লামা বাজারের গোপাল বাবুর মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে ৩ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। এ কাজে সড়কটি কোথাও কোথাও ২ থেকে ৫ ফুট উঁচু করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রথম দিকে বালি দিয়ে সড়ক উঁচু করার কাজ করলেও পরে শুরু হয় মাটির ব্যবহার। এই কাজে মাটির যোগান দিতে পৌর এলাকাজুড়ে শুরু হয় পাহাড় কাটা।
সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার বগারঝিরি, লাইনঝিরি, মধুঝিরি, মাস্টার পাড়া, বড় নুনারবিল পাড়া, সাবেক বিলছড়ি, রাজবাড়ী ও শীলেরতুয়াসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটা অব্যাহত রয়েছে।
বগারঝিরি এলাকার পশ্চিম পাশে কখনো পাম্প মেশিন, কখনো শ্রমিকের দ্বারা পাহাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে। সেই কাটা মাটি ফেলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ও পাহাড়ি ঝিরিতে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ঝিরিতে মাটি ফেলার কারণে পানির গতিপথ বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
অপরদিকে লাইনঝিরি এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইতিমধ্যে একটি পাহাড়ের প্রায় ১৫ শতাংশ কেটে ফেলেছেন এক ব্যক্তি। বর্তমানে তিনি বুলডোজারের মাধ্যমে আরেকটি পাহাড় কেটে ফসলি জমি ভরাট করছেন। অভিযোগ রয়েছে, দিনের বেলায় বুলডোজার সরিয়ে রাখা হয়। রাতে শুরু হয় পাহাড় কাটার কাজ।
পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযানও থেমে নেই। গত ৯ ডিসেম্বর পৌরসভার মধুঝিরি এলাকায় অভিযান চালান ইউএনও মো. রেজা রশীদ ও এসিল্যান্ড মাহফুজা জেরিন। অভিযানে একটি চেইন ডোজার ও ট্রলি জব্দ করা হয়।
এছাড়া গজালিয়া ইউনিয়নের সাপমারা ঝিরি এলাকায় পাহাড় কাটার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, পাহাড় কাটার ফলে বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে বিপুল পরিমাণ জান-মালের ক্ষতি হতে পারে।
এসিল্যান্ড মাহফুজা জেরিন বলেন, প্রশাসন কাউকে পাহাড় কাটার অনুমতি দেয়নি। কেউ পাহাড় কাটলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত: